রাঁচি ভ্রমণ

প্রেয়সি মুখার্জি 






সাল টা ২০১৫। তখন আমি পড়ি ক্লাস সেভেনে। হঠাৎ করেই একদিন শীতের দুপুরে ঠিক হলো রাঁচি যাবার কথা। কথায় আছে না,"উঠল বাই তো কটক যাই।" রাঁচিতে আমার বড়মাসি ও মেসোমশাই থাকেন কাজের সূত্রে। তাই খাওয়ার, থাকার খরচটা পুরো লাঘব হবে ভেবেই সায় দিলেন আমদের বাড়ির অর্থমন্ত্রী আমার বাবা। ব্যাস আর কি ভালো কাজে আর দেরি কেন? কেটে ফেলা হল  "রাঁচি-হাতিয়া" ট্রেনের  তিনটে টিকিট। ১৫ দিন পর ছিল আমদের ট্রেনের টিকিট। আমার আননদ আর ধরছিল না। অবশেষে এল সেই দিন ২৫.০১.২০১৫। সময় মত ট্রেন এল এবং সময় মত পৌঁছাতেও পেরেছিলাম। এই দিন ট্রেন এর চিরাচরিত দেরি হবার বদনামটা ঘুচিয়েছিলেন সেই চালক কাকু। 

রাঁচি স্টেশন 
 

রাঁচি এসেই সবচেয়ে বেশী ভালো লাগল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। শহরের মাঝেই ছিলাম আমরা কিন্তু দূষণ সেই সৌন্দর্যকে কলকাতার মত ততটা গ্রাস করতে পারেনি।প্রথমে আমরা গেছিলাম রাঁচির বিখ্যাত পাহাড়ী শিব মন্দিরে। সেই মন্দিরের বিশেষত্ব হলো মন্দিরটা দাঁড়িয়ে ১০০ টা সিঁড়ির উপর। তারপর সেইখান থেকে গেলাম "Tagore Hill" এ। সেই খানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসে থেকে ছিলেন কিছুদিন। ওইখান থেকে গোটা শহরটা দেখা যায়। কি অপূর্ব সেই দৃশ্য। সেই খানের রামকৃষ্ণ মিশনেও মেসোমশাই নিয়ে গেছিলেন।

শিব মন্দির

পরের দিন আমরা গেছিলাম রাঁচির বিখ্যাত চিড়িয়াখানায়। এত বড় আর সুন্দর চিড়িয়াখানা আমি আগে দেখিনি। প্রতিটি পশু পাখি well- maintend . পরিবেশর দিক ও ভীষন ভাবে নজর দিয়েছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এত্ত বড় চিড়িয়াখানায় একটা গোটা দিন চলে গেছিল। 

চিড়িয়াখানা

পরের দিন গেছিলাম হুড্রু আর দশম জলপ্রপাত দেখতে। আহা! সেই দৃশ্য আমি আমার জীবনের শেষ অবধি মনে রাখব। শেষ হলো আমদের জার্নি বিখ্যাত " রাজরাপ্পা মন্দির" দর্শন করে। দেবী ছিন্নমস্তরূপে পুজিতা হন এইখানে।


হুড্রু জলপ্রপাত

দশম জলপ্রপাত

রাজরাপ্পা মন্দির 

এছাড়া মেসোর অফিসের সহকর্মীদের বাড়ি গিয়ে প্রচুর খাওয়া দাওয়া তো ছিলই। এছাড়া M S Dhoni এর ক্রিকেট practice এর মাঠ টাও দেখেছিলাম। যাই হোক রাঁচি ভ্রমণ আমার জীবনের অন্যতম সেরা ভ্রমণ এর মধ্যে একটি। এটা আমি কোনো দিন ও ভুলতে পারব না।

*সব ছবি লেখকের নিজস্ব

*ছাত্রী, সাম্মানিক তৃতীয় অর্ধবর্ষ 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পায়ে পায়ে প্রাসাদ নগরী...

এঞ্জেলবার্গের তিনটি দিন

সময়