সিক্ত যূথী

 ২০/১০/২০২০

কস্তুরী দাশ*

"আমরা আদিবাসী কই আমরা আদিবাসী

বারালাগিঝোর তলে বারালাগিছে

বারিতা বারাছিয়া জালজুটিটি নানোদ

ই দুনিয়া নামায় সোনার দুনিয়া

ই রাজ্য নামায় সোনার রাজ্য

ই ভারতবাসী নামায় কই নামগে আদিবাসী

আমরা আদিবাসী কই আমরা আদিবাসী"


অনুবাদ: আমরা আদিবাসী, আমরা আদিবাসী

যতই ঝড় উঠুক , কিংবা বিপদ আসুক

আমরা আমাদের  সোনার পৃথিবী

রক্ষা করবো

আমরা আমাদের রাজ্য রক্ষা করবো

আমরা আমাদের সোনার ভারত রক্ষা করবো

আমরা আদিবাসী, আমরা আদিবাসী


বীরভূমের কঙ্কালিতলা সংলগ্ন লালদহ গ্রাম। সাঁওতাল পাড়া, বাগদি পাড়া পার হয়ে সর্দার (ওঁরাও) পাড়া। মাটির বাড়ি, নানা রঙের আলপনা, গাছগাছালি, পুকুর, আখক্ষেত মিলিয়ে চোখে সবুজের আরাম।

শ্রীনিকেতন বাসস্ট্যান্ড  থেকে লাভপুরগামী বাস ধরে চিত্রার মোড় পেরিয়ে, কঙ্কালিতলা হয়ে আমরা পৌঁছতাম আমডহরা। পল্লীচর্চা কেন্দ্রের এনথ্রোপোলজির ছাত্র -ছাত্রী আমরা কয়েকজন.. ট্রাইবাল স্টাডি র জন্য সপ্তাহে তিন/চার দিন এই পথে।

আমার বিষয় ছিল ওদের ভাষা, যার কোনো লিখিত অবয়ব ছিলনা। ওদের ভাষা 'কুরুখ'। পারিপার্শ্বিক অন্যান্য ভাষার লোকজনদের সাথে মিশতে মিশতে ওদের ভাষা তখন ক্রমবিলুপ্তির পথে। চর্চার অভাবে যা শুধুমাত্র ওদের বাপ-ঠাকুর্দার মুখে শোনা গান-ছড়ার মধ্যেই রয়ে গিয়েছিল।

একটুকু কথা শুনি


মূলত, মুখে মুখে প্রচার হওয়া ওদের গানের মূল ধারাটি আদিবাসী জীবন ভিত্তিক। নাচ ও গান ওদের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। ওদের নিজেদের ভাষা কেবলমাত্র ওদের বাপ দাদাদের কাছে শোনা গান, ছড়া, মন্ত্র এসবের মধ্যেই তার সাক্ষর রেখেছিল। আশেপাশের স্থানীয় ভাষার প্রভাবই ওদের মধ্যে স্পষ্ট। 

ওদের সরল, অনাড়ম্বর জীবন জাফরির আলপনা আমাকে মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিয়েছিল। গ্রামে ঢোকার মুখেই বড় পুকুর, তার পাশ দিয়ে যেতে যেতে ওদের হাস্যালাপ কানে আসতো। পুকুরের জাল টানতে টানতে ওরা জিজ্ঞাসা করতো "দিদি ইইই.. একসার আদিইই" (দিদি, ভালো আছো)---উত্তর দিই , "একসার আদি, একসার আদি" (ভালো আছি, ভালো আছি)। গ্রামেরই এক ছোটখাটো চেহারার 'তাচি '। ওদের ভাষায় ' তাচি ' মানে পিসী। সে নিজেই আমাকে বলেছিল তাকে তাচি বলে ডাকতে। এক এক দিন সারা সকাল তাচির ঘরে গল্প করতে করতে কেটে যেত। সেই সব গল্পের মাঝেই তাচি আমাকে শিখিয়েছিল বড় বড় শামুকের ঝোল, বেগুন বাটার চাটনি কিভাবে করতে হয়।

ডাঙ্গালী কালি পূজো

ওরা ওঁরাও। নিজেদের গ্রামকে ওরা সর্দার গ্রাম বলতো। চৈত্র মাসে ডাঙ্গালী কালি পূজো, ভাদ্র মাসে কারাম উৎসব, গ্রাম বাঁধা পরব, ল-সম্বন্ধী(আশীর্বাদ অনুষ্ঠান), নাদ- হজরনা(দুর্গা পূজো) এইসব নানান উৎসবের  বুননে ওদের জীবনের স্বাদ-আহ্লাদের শরিক হতে পেরেছিলাম আমরা।

সর্দারদের মধ্যে অন্তর্বিবাহ প্রথা প্রচলিত। ওদের বিয়ের আগে পাকাকথা বলাকে ওদের ভাষায় ল-সম্বন্ধী বলে। আমাদের ফিল্ড চলাকালীন গ্রামের একটি ছেলের বিবাহ পূর্বে ' ল-সম্বন্ধীর' এমন একটি সুন্দর অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে পেরেছিলাম। নাচ-গান , তাড়ি সহযোগে সে অনুষ্ঠান ছিল বর্ণময়। 

-সম্বন্ধী আশীর্বাদ অনুষ্ঠান

সাড়ে বাইশ টাকা দিয়ে ছেলের বাবা-মা মেয়ের বাবা-মা র হাতে দিয়ে বিয়ের কথা পাকা করে।গ্রামের এই অনুষ্ঠানে 'ল-সম্বন্ধীর' গান শুনে লিখে নেওয়ার জন্য হাজির হয়েছিলাম ওদের বাড়িতে।

বিরাট একটা উঠোন, তার দু-প্রান্তে দুটো বিরাট এলুমিনিয়ামের দুটো বিরাট হাঁড়ি, তাড়ি ভর্তি, তার ওপর  মুড়ি ছড়ানো। সেই হাঁড়ি দুটোর ওপর দিয়ে মশারির মত জাল দিয়ে ঢাকা। পাশে রাখা বিরাট বিরাট সাইজের এলুমিনিয়ামের গ্লাস। সেই গ্লাস ওই জালের ওপর দিয়ে হাঁড়ির ভেতর ঢুকিয়ে তুলে আনছে গ্লাস গ্লাস তাড়ি।

তোমাদের এই হাসি খেলায়

দু-পাশে সারিবদ্ধ ভাবে মেয়েরা হাতে হাত ধরে আনন্দে মাদলের তালে তালে নাচছে। মেয়েদের দুটি দলের পাশে পাশে এক এক জন পুরুষ বাজনদার এক গ্লাস করে তাড়ি খাচ্ছে আর তাদের মাদলের বোলে গোটা লালদহ গ্রাম এক অনাবিল সুর-ছন্দের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। আমার কাছে তখন টেপ-রেকর্ডার ছিলোনা। আজ ভাবলে খুব আপসোস হয়। অগত্যা, সবে খাতা খুলেছি, কিছু গান যা কানে শুনছি লিখবো বলে। যদিও ওদের দলবদ্ধ সংগীতের মর্মোদ্ধার সেই সময় সম্ভব নয় ভেবে যা কানে আসছে লিখে যেতে থাকি। ওরা গাইতে থাকে..

কাকায় গুড়িয়ায় গুড়িয়ায় সামদো

খরি খরি না বালি বালি

না দাসটাকা দে আলো

সামদো বাহিনী

গুড়িয়ায় সানধ রাখলো

গুড়িয়ায় বানধ বাঁধলো

অনুবাদ:  ও আমাদের নতুন সম্বন্ধীরা

               সময় নষ্ট কোরোনা

                শুধু দশ টাকা দাও

               আমরা মদ আনি আর খাই

               এসো একসাথে নাচ করি

               আমাদের সম্পর্ককে 

               আরো মধুর, মজবুত করি।

এমন সময় ঠক শব্দে সম্বিৎ ফেরে ,দেখি আমার পাশে এক গ্লাস তাড়ি রেখে ওরা কয়েকজন আমাকে বলে, ওদের গান নিতে গেলে আমাকে আগে ওই অমৃত পান করতে হবে , আর ওদের সাথে নাচতে হবে। আরো বলে, দু-বোতল মদ আর একশো টাকা দিলে তবেই আমি ওদের গান নিতে পারবো, নচেৎ নয়। এমৎ অবস্থায় আমার বন্ধুরা কেউ সঙ্গে নেই, তারা যে যার নিজের বিষয় অনুসন্ধানে এদিক-ওদিক ব্যস্ত। অবস্থার বিচার করে উঠে পড়ি, নাচতে রাজি হই। আশ্চর্য, দু-বোতল মদ আর একশ টাকার কথাই তোলে না আর !

তাচি এসে পাশে বসে, বলে দিতে থাকে গানের মানে গুলো। 

ছেলের বাড়ির লোকেরা যখন মেয়ের বাড়িতে যায়, তখন বাড়ির মেয়েরা অতিথিদের পায়ে জল দিয়ে ধুয়ে দিতে দিতে গেয়ে ওঠে-

              আসুন আসুন হাল্লে

              চিলিমানযেকা হাল্লে তামকারেনা

             অনুবাদ:   আসুন সম্বন্ধীরা

         আমাদের জমি জমা সম্পত্তি কিছু নেই

         শুধু আছে আমাদের মেয়ে

         আমরা আমাদের প্রিয় মেয়েটিকে      আপনাদের দিচ্ছি।

সর্দারদের জীবনে ছড়ার প্রভাব অপরিসীম। বিশেষত মুখে মুখে ছড়া কেটে এদের পারস্পরিক কথা বলতেও শোনা যায়। তেমনই একটি সংগৃহিত ছড়া..

                 দোদুম দোদুম ধূমসাকালি

                 কিদ্ কলমের পোঙরামারি

                 ধূরজা ধূরজা

অনুবাদ:   দৌড় দৌড় দৌড়

                 দুষ্টু বাচ্চারা সব ছোট্ ছোট্

 গ্রাম বাঁধা পরব

গ্রাম পূজো বা গ্রাম বাঁধা পরব সর্দারদের একটি অন্যতম পরব। মাঘ মাসের প্রথম দিনে এই পূজো হয়। এদের পুরোহিত কে পাহান বলা হয়।  সাদা, লাল, কালো এই তিনটি মোরগ দেবতার উদ্দেশ্যে বলি দিয়ে  পরবের সূচনা হয়। প্রথমে সাদা মোরগ বলি দেয় এবং মন্ত্র পড়ে..

         ধর্মে কেলাস নিভাগে ছাইয়া নাগদান

          ই পূজা নাগদান নিঙ

          সাক্কিরা  লাগদাই

           সাক্কিরা নাগদাই

অনুবাদ:  হে ভগবান আমি তোমাকে পূজো করছি। তুমি আমাদের গ্রামকে রক্ষা করো। আমি এই সাদা মোরগ টি তোমাকে দিলাম।আমি চেষ্টা করলাম তোমাকে খুশি করতে। 

এভাবেই পর পর সাদা, লাল ও কালো মোরগ বলির মধ্যে দিয়ে গ্রাম বাঁধা পরব টি শুরু হয়।

যে কথা উল্লেখ না করলে সর্দারদের জীবনের কিছুই বলা হয় না, তা হলো কারাম উৎসব। ভাদ্র মাসে এই উৎসব হয়ে থাকে। ওদের রীতি অনুযায়ী তিনজন অবিবাহিত ছেলে পাহানের (পুরোহিত) সাথে জঙ্গলে গিয়ে কারাম গাছের ডাল কেটে নিয়ে গ্রামে আসবে। জঙ্গলে কারাম গাছ খুঁজতে খুঁজতে তারা গেয়ে ওঠে..

               ইনয়া জিলো দিলো কা খোজেলা

               কারাম খোজেলা

               দিলো সাঙ্গে খোজেলা

               হাইরে তিলো রামলোকে

               মো লোকে জরিগেলা

               হামারাকা কারো লাদি পার

               কারো বাই

অনুবাদ:  আমরা যেকোনো জায়গায় যাবো

                কারাম গাছ খুঁজতে। আমরা পরোয়া করবো না। সেটা নদীর ধারে হোক কিংবা গভীর অরণ্য।

কারাম ডাল খুঁজে এনে গ্রামে ওরা সেই ডাল পুঁতে দেয়। তারপর  টানা ছ-দিন পূজো করার পর সপ্তম দিনে ওরা কারামের ডাল জলে বিসর্জন দেয়। নাচ, গান , মদ-তাড়ি সহযোগে আনন্দের মধ্যে দিয়ে ওরা এই উৎসব পালন করে। সর্দার দের বিশ্বাস ওদের দৈনন্দিন জীবনের ভালো মন্দ এই কারাম উৎসবের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। সারাবছর ওরা এই উৎসবের অপেক্ষায় দিন কাটায়। তাই , কারামের ডাল বিসর্জন দিতে গিয়ে ওর গেয়ে ওঠে..

          সায়ন ভাদর চালিন গেলা

          হারে বাহিনী কাইন্দাই

           হারে বাহিনী রুপাই

          হায়রে পিরাই নূপার

          কারাম গাউয়ার

অনুবাদ :  শ্রাবন-ভাদ্র চলে গেল

                 সব ভাই-বোন কাঁদছে

                 সবার চোখের জল পড়ছে

                 কেউ কেউ আবার হাসছে

                 সেই মধুর দিনগুলোর কথা মনে করে

সত্যি, বড় মধুর ছিল সেই সময়। মাত্র দু-মাস। ওদের জীবনের আনন্দ, বেদনার সঙ্গী হয়ে উঠেছিলাম। আমাদের কাজের সময়ও একসময় শেষ হয়ে গেল। শেষ দিন গ্রামের আলপথ ধরে আমার সেই তাচি , পৌঁছে দিয়ে গেল আমডহরা বাসস্ট্যান্ড অবধি। আমডহরা বাসস্ট্যান্ড এ দাঁড়িয়ে থাকা তাচি র সেই হাসি হাসি মুখ খুব মনে পড়ে।

শেষ দেখা।

মনে পড়ে আরো কতো কি..ওদের ভালোবাসা, আনন্দ, বেদনার সঙ্গী হয়ে কাটানো মুহূর্তগুলো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে জীবনযাপনের মাঝে।ওদের ভাষার যে অমৃত সুধা আমি আঁজলা ভরে নিয়েছি , আজ এতদিন পর তার অল্প বিস্তর হলেও ভাগ করে নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আজও কখনও কখনও মন খারাপের একলা দিনে মনোপথ ধরে চলে যাই লালদহে..শুনতে পাই, দিদিইইইইই....একসার আদিইইইইই........

সেই সুরের রেশ ধরেই আজ প্রায় তেইশ বছর পরে আবারও সেই পথে। এই বছরই ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে লক ডাউন শুরু হবার আগেই ঘুরে এসেছি আমার প্রিয় সেই স্মৃতি জড়ানো পথে..সঙ্গী ছিলেন নারান দা ওই গ্রামেরই টোটো চালক। 

পথ ঘাট অনেকটাই পালটে গেছে.. আমডহরা বাস স্ট্যান্ড থেকে আল ধরে মিনিট পনেরো হাঁটার পর আমরা সে সময় গ্রামে পৌঁছতাম..এখন সেখানে লাল মাটির রাস্তায় টোটো চড়ে সহজেই পৌঁছনো যায়। 

পৌঁছেই খোঁজ করেছিলাম 'তাচি' র..'তাচি' আর নেই, নেই মোড়ল চৈতন্য সর্দার ও। যারা সেই সময় সদ্য বিবাহিতা ছিলেন, তাদের মধ্যে সুমিত্রা সর্দার চিনতে পারলেন আমাকে। বললেন, 'হ্যাঁ, মনে আছে তো..তোমরা ছ-সাত জন আসতে তো'। এ যে বিরাট প্রাপ্তি ! মনে রেখেছে !

সুমিত্রা সর্দার.. চব্বিশ বছর পর আবার দেখা হলো আমাদের

চৈত্র মাসের উৎসব, 'ডাঙ্গালী কালি' পুজোয় যাবার জন্য নেমন্তন্ন ছিল ..প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যাবো বলে। তারপরই তো লক ডাউন..যেতে পারলাম না। জানিনা সর্দার পাড়ার সেই মানুষ গুলো কেমন আছেন। এই লক ডাউন তাদের জীবন-জীবিকায় নিশ্চয়ই বিরাট প্রভাব ফেলেছে.. করোনার থাবা থেকে ওরা কি নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে পারছে..মনের মধ্যে হাজারো চিন্তার ধর-পাকর। 

কবে আবার পৌঁছতে পারবো জানিনা। আদিবাসী পাড়ার অন্ধকার পথে কোনো সাহায্যের আলো পৌঁছয় কিনা জানা নেই.. শুধু প্রার্থনা রবি ঠাকুরের গানে..

            প্রভু, বিরস বিকল প্রাণ,

            কর' প্রেমসলিল দান,

             ক্ষতিপীড়িত শঙ্কিত চিত কর'   

             সম্পদবান।

*ছাত্রী, ১৯৯৪ 



মন্তব্যসমূহ

  1. খুব ভালো লাগল। অনেক কিছু জানা গেল।

    উত্তরমুছুন
  2. Baro sundar tomar abhiggota..khub anubhuti samponno lekha..oder jibon jaatra kemon chochhe ekhon ke jaane ?
    Aamar Rajsahi r kaachhe ekta santal graam e ek ar oder ekta biyer anusthan e thaka r soubhagyo hoyechhilo..oder chhobi o gaan er video o aamar aachhe..ekta kathai bhabchhilam ki korey ora ei adhunik samaj er modhye thekeo nijeder sanskriti o oitihyo Vijay rekhechhe...satyi i ananyo o anobodyo tomar lekha..

    উত্তরমুছুন
  3. মৌসুমী ব্যানার্জী কি সুন্দর অভিজ্ঞতা তোমার! ওদের মাঝে গিয়ে কত কী দেখলে, জানলে। ওদের মধ্যে কৃত্রমতা থাকে না। ওদের ভালোবাসা পেয়েছ তুমি। এর মানে তুমি নিজেকে ওদের একজন করে নিতে পেরেছিলে বলেই এমনটা ঘটেছে।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হিমালয়ের কঠিন ট্রেক; জংরি-গোচা লা

পায়ে পায়ে প্রাসাদ নগরী...

অপেক্ষা