জলবায়ু পরিবর্তনঃ ভারতীয় উপমহা্দেশের ভাবনা ও সঙ্কট


২০/১০/২০১৯  

ডঃ মনীষা দেব সরকার*


মানব সভ্যতার ইতিহাসের পাতা ওলটালে তার উন্মেষ, বিকাশ ও বিবর্তনের বিচিত্র ধারা নজরে পড়ে। এর মধ্যে বিশেষ করে কোনো কোনো নদীভিত্তিক সভ্যতার শেষ পরিণতি অনেকটাই জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত। কথায় বলে ‘জলই জীবন’। প্রাচীনকালে বসতি স্থাপনের সময় মানুষ তাই বেছে নিয়েছিল প্রবাহিত জলধারার প্রাচুর্য সমৃদ্ধ অঞ্চল। গড়ে উঠেছিল ‘লাঙ্গল-ভিত্তিক’ (Hoe Culture) সভ্যতা, জল যেখানে জীবন ও জীবিকার প্রধান উপকরণ।
জলের সাথে জলবায়ুর সম্পর্ক সুগভীর। ভূপৃষ্ঠে মিষ্টি জলের প্রবাহ অর্থাৎ নদীগুলি জলের উৎস হয় হিমবাহ গলিত জল অথবা তা বৃষ্টির জলে পুষ্ট। জলের প্রাপ্তি পৃথিবীর সর্বত্র সমান নয়। কোথাও কম, কোথাও বেশী। এটা নির্ভর করে কোনো দেশ কোথায় অবস্থিত তার ওপর। পৃথিবীকে উষ্ণতার ভিত্তিতে যে তিনটি প্রধান অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে তাতে উষ্ণ ক্রান্তীয়মন্ডল (Warm Tropical Zone)সবচেয়ে উষ্ণ আর সবচেয়ে শীতল মেরু অঞ্চল (Cold Polar Zone)। এই দু’য়ের মাঝে অবস্থান করছে নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল (Temperate Zone)। আসলে সূর্যকিরণের প্রখরতা পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে সর্বত্র সমানভাবে পড়ে না। সেজন্য বেশী বা কম উত্তাপকে সে বায়ুপ্রবাহের দ্বারা ছড়িয়ে দিয়ে একটু সমতা আনে। মেঘ সৃষ্টি বা বৃষ্টিপাতের পরিমাণও সর্বত্র সমান নয়। মহাদেশের কোথাও জল প্রচুর কোথাও বা তা অপ্রতুল। সেজন্য মানুষের বসতি বা সভ্যতার উন্মেষ স্থানভিত্তিক হওয়াই তো স্বাভাবিক।
ভারতীয় উপমহাদেশ সামগ্রিকভাবে মৌসুমী বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত। সারা বছর ধরেই তার আসাযাওয়া। প্রতি বছরে তার বৃষ্টিপাতের পরিমাণের মধ্যেও রয়েছে স্থানকাল ভিত্তিক বৈষম্য। কৃষিভিত্তিক এই দেশগুলির (যার মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভূটান ও বেশ কিছু দ্বীপপুঞ্জ) অর্থনীতিও তাই বৃষ্টিনির্ভর। বৃষ্টির জল নানাভাবে সঞ্চারিত হয় নদী, জলাশয় বা ভৌমজলস্তরে। এর ওপর নির্ভর করে থাকে মানুষের জীবন ও জীবিকা।
বর্তমানে জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতার কথা ভাবলে অতীতে এমন ছিল কিনা এ প্রশ্ন এসে যায়। আজ বিশ্বে মানবসভ্যতার যে বিস্তার তার মূল কারণ ছিল জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতা তা একটা প্রমাণিত সত্য। বিজ্ঞানীরা পুরা-জলবায়ু (palaeo-climate)সম্পর্কে এ ব্যাপারে বিশেষ আলোকপাত করেছেন। তাঁরা মনে করেন প্রায় ১ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে মানুষ প্রথমে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইউরোপ, এশিয়া তথা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানীরা বলেন প্রায় ৬০ হাজার বছর আগে আফ্রিকার জলবায়ু আর্দ্র থেকে শুষ্ক হতে শুরু করে এবং এটাই সেখানকার মানুষের দেশান্তরের প্রধান কারণ। আন্যান্য কারণের মধ্যে শুষ্কতা ও মরুকরণ জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে উষ্ণ অঞ্চলের মানুষের স্থানান্তর বা সভ্যতার বিলুপ্তির একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। মহেঞ্জোদাড়ো-হরপ্পার সিন্ধু সভ্যতা এর অন্যতম। এছাড়া রয়েছে মিশরের নীলনদ সভ্যতা ও মেসোপটেমিয়ার (বর্তমান ইরাক) আক্কাদীয় (Akkadian)সভ্যতা। 
ভারতীয় উপমহাদেশের মৌসুমী জলবায়ু একটি অতি পরিবর্তনশীল জলবায়ু। প্রায় ৯ হাজার বছর আগে পর্যন্ত তা ছিল অত্যন্ত দুর্বল প্রকৃতির। এরপর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেলে কৃষিজীবীদের পক্ষে তা বেশ সুবিধাজনক হয়। বৃষ্টিপাতের বর্ধিত পরিমাণ নদীজলের বৃদ্ধি ঘটায়। ফলে পর্যাপ্তভাবে নিবিড় কৃষিকাজ সম্ভব হয়। মহেঞ্জোদাড়ো-হরপ্পার সভ্যতার বিলুপ্তির কারণ যদিও পূর্বে মনে করা হত বিদেশী শত্রুর আক্রমণ, সামাজিক অস্থিরতা বা বানিজ্যের ক্রমান্বয় অবনতি কিন্তু গবেষকরা জলবায়ুর শুষ্কতা ও বৃষ্টিহীনতাকেই পরবর্তিকালে প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। ভারতে হারিয়ানা থেকে রাজস্থান অঞ্চলে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মনুষ্যবসতি ঐস্থানে খনন কার্যের ফলে পাওয়া গেছে।     
এখন প্রশ্ন প্রাচীনকালের জলবায়ু পরিবর্তন এইসব অঞ্চলের মানুষের ওপর কেমন প্রভাব বিস্তার করেছিল। কেমনভাবেই বা মানুষ তার মোকাবিলা করেছিল। প্রথমকথা প্রাচীনকালের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ সম্পুর্ণভাবে প্রাকৃতিক। মানুষ সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের জীবনযাত্রা ও কার্যকলাপকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। অথবা কোনো কোনো স্থানে এই পরিবর্তন চরম পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছিল। মহেঞ্জোদাড়ো-হরপ্পার মানুষরা প্রধানত কৃষিজীবী হওয়ার সুবাদে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে শস্য পরিবর্তন করেছিল। কারণ এখানে জলবায়ু পরিবর্তন প্রকটিত হয়েছে বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা, বৃষ্টিহীনতা, অতি শুষ্কতা ও নদীজলের ক্রমহ্রাসমানতা পর্যায়ক্রমিকভাবে ঘটায়। প্রাথমিকভাবে জল-প্রিয় শস্যগুলি যেমন ধানের পরিবর্তে এসেছে গম বা বার্লি। পরবর্তীকালে প্রকৃতি শুস্কতর রুক্ষতর হয়ে গেলে তারা বসতি স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ উদ্ভূত খরা পরিস্থিতিতে কৃষিজমিতে অপর্যাপ্ত জল সরবরাহ, অপর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন এবং পানীয় জলের পরিমিতিই এইভাবে একটা ‘push factor’ হিসাবে কার্যকরী হয়েছিল। আর একটি স্ফূরিত বিকশিত সভ্যতার এইভাবেই বিনাশ ঘটেছিল। এই উদাহরণ যদিও পৃথিবীর সমস্ত সভ্যতালুপ্তির কারণ নয় কিন্তু ভারত ও তার সন্নিহিত দেশগুলিতে বৃষ্টিহীনতা বা খরা পরিস্থিতির উপস্থিতিই উষ্ণমন্ডলের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান প্রভাবশীল কারণ। 
বর্তমান যুগে জলবায়ু পরিবর্তন আর পুরোপুরি প্রাকৃতিক কারণ উদ্ভূত নয়। মানুষের নানা কার্যকলাপ এই বিরূপ পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। জলবায়ু কোনো রাজনৈতিক সীমারেখা দ্বারা সীমায়িত নয়। সেজন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবিলা করতে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের বহু দেশ। ভারতের মত যেসব দেশগুলিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশী তারাই সব থেকে বেশী চিন্তিত। বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে আমরা অনেকটাই বর্তমান পরিস্থিতি জনিত ভবিষ্যৎ সঙ্কট অনুমান করতে পারি।
IPCC (Inter-governmental Panel on Climate Change)২০১৪ সালের রিপোর্টে বলা হয়েছে। ১৯৫০ সাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে তাপপ্রবাহের (Heat Wave) ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শীতল দিনের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। জলবায়ুর সঙ্গে মানুষের আন্তসম্পর্ক বিঘ্নিত হয়েছে মানুষেরই কারণে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিকূল জলবায়ু চরমভাবে প্রকাশিত হয়েছে স্থানে স্থানে। পৌনঃপুনিক সাইক্লোন, টর্নেডো, অতি উষ্ণ বা অতি শীতল প্রবাহ, শিলাবৃষ্টির প্রাধান্য, বজ্রঝড়, খরা বা বন্যা পরিস্থিতি মানুষের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপকে অতিমাত্রায় বিঘ্নিত করেছে। আশঙ্কা করা হয়েছে আগামী দিনগুলিতে এই চরমভাবাপন্নতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং আগামী ২১০০ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশে মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণতা ও আর্দ্রতা মানুষের জীবন সঙ্কটময় করে তুলবে। ঘনিয়ে আসবে তীব্র খাদ্য সঙ্কট।
কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস ছাড়াও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তীব্রতার কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মানুষের স্বাস্থ্য বা তার বসবাসের স্থান শহর বা গ্রামগুলিতেও বিরূপ প্রভাব পড়বে। ‘Green House Gas’ বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট বিশ্বের উষ্ণায়ন সৃষ্টি করবে আরও নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি ও সমস্যা।
ভারতীয় উপমহাদেশের কয়েকটি স্থানকে ‘Climate Hot Spots’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর প্রত্যেকটিই ঘনজনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে যেখানে যে কোনো বিরূপ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা চরম বিপর্যয়ের সৃষ্টি করবে। ২০০৯ সালের ADB (Asian Development Bank) এর রিপোর্ট অনুযায়ী এই ‘Climate Hot Spots’ গুলি হল-
·         আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর সন্নিহিত নিচু উপকূলীয় অঞ্চল।
·         ঘনজনবসতিপূর্ণ বদ্বীপ অঞ্চলগুলি।
·         উপকূলে অবস্থিত মেট্রোপলিটান শহরগুলি- যেমন করাচি, মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা ও ঢাকা।
·         নিচু ও ছোট দ্বীপগুলি- যেমন মলদ্বীপ ও প্রায় শুষ্ক ও কম আর্দ্র অঞ্চলগুলি।
প্রকৃতপক্ষে উল্লিখিত অঞ্চলগুলিতে জলবায়ু পরিবর্তনের আভাস ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। এখানকার উপকূল অঞ্চলের প্লাবন, মরুকরণ অথবা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক অন্যান্য বিরূপ ঘটনাগুলি তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এর ফলে আগামী দিনগুলি মানুষের জীবনধারণ হয়ে উঠবে ভয়াবহ। অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে অথবা অন্য কোনো স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। সেই স্থান অন্য কোনো দেশও হতে পারে। যেমন ঘটেছে বাংলাদেশ-ভারত, আফগানিস্তান-পাকিস্তান, ভারত-পাকিস্তান এবং নেপাল-ভারতের ক্ষেত্রে। জলবায়ুর ধীর পরিবর্তন সবসময় প্রকটিত হয় না, কিন্তু কালক্রমে তা অনিবার্য বিপর্যয় নিয়ে আসে। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এইসব স্থানান্তরিত ও আশ্রয়প্রাপ্ত মানুষদের জন্য এবং আগামী দিনের পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ‘Green Climate Fund’ তৈরি করা হয়েছে যাতে দাতা দেশগুলি আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বাৎসরিক ১০০ বিলিয়ন ডলার দান করবেন। ২০৯৯ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রার পরিমাণ বর্তমান তাপমাত্রার থেকে অন্ততঃ ১.৮ সেলসিয়াস থেকে ৪ সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর এক বিশাল অঞ্চল (প্রায় ২% থেকে ১০% ভূমিভাগ) নিরন্তর খরা কবলিত হয়ে পড়বে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
World Bank রিপোর্ট (২০১৩) অনুযায়ী ভবিষ্যতের যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তা কোনভাবেই আশাপ্রদ নয়। রিপোর্টের মতানুযায়ী-
·         সমগ্র বিশ্বে প্রায় ২সেলসিয়াস উত্তাপ বৃদ্ধির কারণে ভারতে মৌসুমী বায়ুর আগমন অত্যন্ত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
·         এখনকার পরিস্থিতিতে প্রতি ৪ সেলসিয়াস উত্তাপ বৃদ্ধিতে ১০০ বছরে অতি আর্দ্র মৌসুমী জলবায়ু সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই শতাব্দীতেই প্রতি ১০ বছরে তা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
·         আকস্মিক মৌসুমী জলবায়ুর এই পরিবর্তনে ভারতে বারংবার খরা ও প্লাবনের ঘটনা বৃদ্ধি পাবে।
·         ভারতের উত্তর-পশ্চিম উপকূল থেকে দক্ষিণ-পূর্ব উপকলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
·         শুষ্ক বছরগুলি হবে শুষ্কতর ও আর্দ্র বছর আরও আর্দ্র।   
২০১৫ সালের Paris Agreement অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন সৃষ্টিকারী Green House Gas গুলির নিঃসরণের ক্ষতিকারক প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলির উপর অপরিসীম। এর প্রধান কারণ ঘনজনবসতি ও দারিদ্র্য। এছাড়াও কৃষি উৎপাদনের ঘাটতি হলে খাদ্যসঙ্কট অপরিহার্য। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ যেহেতু অর্থনৈতিকভাবেই কৃষি-নির্ভর সেহেতু অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। মনে করা হয় প্রায় ১৫% মানুষ এতে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়ত ঘটবে।
বর্তমান পরিস্থিতিকে, ভারতে, NDC (Nationally Determined Contribution) ব্যাখ্যা করেছে যদি জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতি- যেমন খরা, প্লাবন, ঘূর্নাবত ইত্যাদি বৃদ্ধি পায় তাহলেও বৃষ্টি-নির্ভর কৃষির ৬০% ও সমগ্র দেশের কর্ষিত অঞ্চলের ৪০% খাদ্য উৎপাদনকে ব্যাহত করবে। বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তন সর্বত্র সমান হারে ঘটে না। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রতিকূলতার প্রভাব শুধুমাত্র আবহাওয়াবিদদের আলোচ্য বিষয় নয়। এর দ্বারা প্রভাবিত অর্থনীতি, সামাজিক রাজনীতি ও বৈষম্য ও সর্বোপরি রাজনীতি। সুতরাং এই জটিলতার মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ও আইন/পরিকল্পনা নীতি প্রণয়ন করা রীতিমত কঠিন। সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও গ্রহণ ক্ষমতাও প্রণিধানযোগ্য।
পরিশেষে বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম অবস্থা নিয়ে যে কোনো পদক্ষেপ শুধু দেশ-কালের সীমারেখা দ্বারা আবদ্ধ রাখা মূঢ়তার পরিচায়ক। এর জন্য সামগ্রিক ও সার্বিক চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন আছে।  


*অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা ও বিভাগীয় প্রধান 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পায়ে পায়ে প্রাসাদ নগরী...

এঞ্জেলবার্গের তিনটি দিন

সময়