গোদাবরীর তীরে একরাত্রি
০৯/০৯/২০১৬
তানিয়া হালদার*
তানিয়া হালদার*
ভ্রমণ পিপাসা থাকলেও বাবার চাকরির জন্য সাত বছর প্রায় গৃহবন্দী। তাই এবার প্রায় টেনে হিঁচড়ে বাবা মা কে নিয়ে বেরিয়েছিলাম তাও অবশ্য চিকিৎসা সূত্রে।এই ছোট্ট ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অন্যতম হয়ে রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের কাছে। প্লেন, মেট্রো, অ্যাপ ট্যাক্সি, অটো, বাস, রোপওয়ে, লঞ্চ, প্যাসেঞ্জার ট্রেন, সুপার ফাস্ট ট্রেন,টয়ট্রেন সবকিছুতেই আমাদের আরোহন করতে হয়েছিল এই ছোট্ট ভ্রমণে ।
আমার চিকিৎসা সূত্রে পাঁচই জুন আমরা হায়দ্রাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।চিকিৎসা ছাড়া সাত বছরের পুরনো ভ্রমণ তৃষ্ণা মেটানোর জন্য আমি অন্তর্জালের বিভিন্ন জালিকাবিন্যাস থেকে একটি জায়গার নাম খুঁজে পেয়েছিলাম। আমার বরাবরই একটু অন্যরকম জায়গা বেশি পছন্দের, যেখানে আগে খুব কম লোক গেছে বা দিঘা পুরীর মত রোজ সবাই যাওয়ার কথা ভাবেনা। তাই হায়দ্রাবাদের মত ঐতিহাসিক শহরের কোন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ না করেই পৌঁছে গিয়েছিলাম পাপি কোন্দালু। এখানে বলে রাখি নামটি মুখস্থ করতে আমায় বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। যাই হোক স্থানটির পূর্ন পরিচয় আমি পরে আরও খুঁজে পেয়েছিলাম। অন্ধ্র্যপ্রদেশ আর তেলেঙ্গানা ভাগ হওয়ার আগে পর্যন্ত অন্ধ্র্যপ্রদেশ ট্যুরিজম পরিচালিত হায়দ্রাবাদ থেকে পাপি কোন্দালু সপ্তাহান্তের ছোট ভ্রমণ হত। বর্তমানে অন্ধ্র্যপ্রদেশ ট্যুরিজম এবং অন্য কয়েকটি ট্যুরিজম সংস্থা এই ভ্রমণের সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। অনেক খোজার পর আমরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। কিন্তু ইদের সময় হওয়ায় হায়দ্রাবাদ থেকে যেকোনো দিকে যাওয়ার বা ফেরার ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়নি। এদিকে বাবার অফিস থেকে বারংবার ফোন আসাতে বেড়াতে যাওয়ার প্রায় সব ইচ্ছেই নিরাশায় পরিণত হয়েছিল। কিন্তু একটা রাস্তা বন্ধ হলে অন্য রাস্তাটি খুলে যায়। বহু চেষ্টা করে সেকেন্দ্রাবাদ থেকে ভদ্রাচলম যাওয়ার ট্রেনের টিকিট পেলাম। আমার এখনো মনে আছে হাসপাতালে আমার সংজ্ঞা ফিরতে আমি প্রথম যে কথাটা জিজ্ঞেস করেছিলাম সেটা ছিল “টিকিট পাওয়া গেল?” অ্যানাস্থেশিয়া আমার সংজ্ঞা কেড়ে নিলেও ভ্রমণের ইচ্ছে টাকে দমন করতে পারেনি। অতঃপর অনেক কষ্টে টিকিট কাটা হল এবং পরেরদিন যাত্রা শুরু হল। এখানে সবিস্তারে স্থানটির বর্ণনা না দিলে বাকি ভ্রমণ অভিজ্ঞতাটি অসম্পুর্ন রয়ে যাবে। পাপি কোন্দালু ট্যুরিজম সাধারণত দুটি স্থান থেকে পরিচালিত হয়। একটি হল ভদ্রাচলম এবং অন্যটি হল রাজমুন্দ্রি। রাজমুন্দ্রি একটি রেল জংশন হওয়ায় আমরা সেখান থেকেই যাত্রা শুরু করব ভেবেছিলাম। কিন্তু ট্রেনের টিকিট কোনভাবেই না পাওয়ায় অগত্যা ভদ্রাচলম থেকে শুরু করতে হয়েছিল। এই দুটি স্থানেই ট্যুরিজম ডিপার্ট্মেন্ট এর একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র আছে যেখানে তারা সকাল সাতটায় সবাইকে আসতে বলেন এবং গোদাবরীর তীরে নিয়ে যান। আমাদের উদ্দিষ্ট স্থান হল গোদাবরীর তীরের একটি ক্যাম্পে একটি নিশিযাপন। নদীর তীরে পৌঁছানো, লঞ্চে করে ক্যাম্পে পৌঁছানো এবং খাওয়ারের ব্যাবস্থা ট্যুরিজম সংস্থাই করেছিল।
তীব্র উত্তেজনা নিয়ে আমাদের যাত্রা নয়ই জুন সন্ধ্যেবেলা শুরু হল সেকেন্দ্রাবাদ থেকে কাকাতিয়া ফার্স্ট প্যাসেঞ্জারে। এই ট্রেনেই প্রথম অভিজ্ঞতা হল যে ভারতের কোন ট্রেন নির্ধারিত সময়ের আগেই কোন স্টেশনে আসে এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশন থেকে চলেও যায়! ভদ্রাচলমে নির্ধারিত সময় রাত তিনটে থাকলেও আমরা দুটো পনেরর মধ্যে পৌঁছে যাই। এবং সম্পুর্ন অচেনা একটি স্টেশনে এসে বড়ই অসহায় বোধ করছিলাম। বাঙালি বলতে আমরা কজন। বাকি সবাই তেলুগুভাষী। যাঁরা হিন্দিটাও ভালো করে বলতে বা বুঝতে পারেননা। বলতে বলতেই একজন অটো চালক হিন্দিতেই বললেন-“কাহা যানা হ্যাঁয় সাব?” আমরা বেশ অবাক হয়েই বলেছিলাম ভদ্রাচলম রোড। পরে জানতে পেরেছিলাম স্টেশনটি ওখানে হলেও চল্লিশ কিলোমিটার দূরে ভদ্রাচলম রোড হল আসল স্থান। আমি ওলা বা উবার খোঁজার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করলে অটোচালক ভদ্রলোক জানালেন যে ওখানে দিনে মাত্র চার পাঁচটি ট্রেন যাতায়াত করে বলে সেসব পরিষেবা নেই। ফলে যেতে হলে অটো, বাস বা অন্য শেয়ারের গাড়ি ছাড়া গতি নেই। অটোচালক ভদ্রলোক পাঁচশো টাকার বিনিময়ে আমাদের ভদ্রাচলম রোড পৌঁছে দিতে রাজি হলেন। অগত্যা অটোতে মালপত্র তুলে আমরাও বসলাম। যাত্রা শুরু হওয়ার মিনিট খানেকের মধ্যেই দেখলাম রাস্তার দুধারে ঘর বাড়ি বা দোকান ধীরে ধীরে কমে আসছে । ক্রমে আমরা এমন এক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি যেখানে আমাদের অটো ছাড়া কোন যানবাহন নেই। অটোর হেডলাইটের আলোর বাইরে নিকষ অন্ধকার। রাস্তাটি জাতীয় সড়ক হলেও দশ পনের মিনিট অন্তর অন্তর দুএকটা ট্রাক ছাড়া আর কোন গাড়ি ছিল না। নিরাপত্তাহীনতার ভয় অটোচালকের ভদ্র আলাপী কথাবার্তায় কেটে যেতে সময় লাগলনা বিশেষ। আমরা ভিন রাজ্যের বাসিন্দা দেখে তাঁর রাজ্যের বিশেষত ভদ্রাচলমের গল্প শুরু করে দিলেন। চলতে চলতে সেখানকার থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট, ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেপার মিল দেখালেন ভদ্রলোক। একই সঙ্গে বললেন একটি মন্দির দর্শনের কথাও যার সঙ্গে একটি পৌরানিক কাহিনি জড়িয়ে আছে। তার সঙ্গে বাংলা এবং হিন্দি থেকে বিভিন্ন শব্দ তেলুগু তে অনুবাদ করেও শোনালেন। এভাবে প্রায় দীর্ঘ একঘন্টার পথ বেশ আনন্দ উত্তেজনায় কেটে গেল। অবশেষে গোদাবরীর ওপর প্রায় দুকিলোমিটার লম্বা সেতু পেরিয়ে পৌছালাম ভদ্রাচলম রোড। এখানে ভদ্রলোক আমাদের নামিয়ে দিয়ে টাকা নিয়ে চলে গেলেন। অটোচালক ভদ্রলোক যে মন্দিরটির কথা বলেছিলেন সেটা আমাদের বিশ্রামাগারের ঠিক সামনেই। ‘সীতারাম মন্দির’ –যেখান থেকে রাবন সীতাকে চুরি করে নিয়ে গেছিলেন। আমারা ঘরে ব্যাগ রাখতে রাখতেই মন্দির থেকে শঙ্খধ্বনি শুনতে পেলাম।তখন ঠিক ভোর চারটে। এই সময়েই মন্দিরের দরজা খোলা হয়। ফ্রেশ হয়ে মন্দিরে গেলাম আমরা। বেশ উঁচু এই মন্দিরটির প্রবেশদ্বার তিনটি। আমরা গিয়ে ভক্তদের লাইনের শেষে দাঁড়ালাম। হঠাৎই দর্শনার্থীরা সবাই লাইনে বসে পড়লেন। আমরা কিছু বুঝতে না পেরে দাড়িয়েই রইলাম। তারপর বাবা একজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল যে সকাল সাতটার আগে মন্দিরের দরজা খোলা হবেনা। যদিও দেখেছিলাম আমাদের সামনেই টিকিট দেখিয়ে বিত্তবান মানুষজন মন্দিরে প্রবেশ করছেন। কিন্তু তেলুগু লেখা বোর্ড গুলির কিছুই বুঝতে না পারায় আর টিকিট কেটে ঈশ্বর দর্শনের ইচ্ছে না থাকায় রেলিং টপকে বেড়িয়ে পড়লাম বাইরে থেকেই রাম আর সীতাকে প্রনাম জানিয়ে। লক্ষ্য করেছিলাম অনেক মহিলা ভক্তেরই মুন্ডিত মস্তক।
গোদাবরীর বুকে লঞ্চ
বিশ্রামাগারে ফিরে এসে তৈরি হয়ে পাওনা গন্ডা মিটিয়ে পাশেই ট্যুরিজম অফিসে হাজির হলাম। ওরা বুকিং ডিটেলস দেখে আমাদের টিকিট দিলেন। সাথে কিছু নিয়মাবলি পেলাম যাতে লেখা ছিল লঞ্চে ওঠার কিছু আগে থেকেই পরের দিন না ফেরা অবধি মোবাইলে নেটওয়ার্ক থাকবে না। আমাদের গন্তব্যে দুটি ক্যাম্প আছে সেটাও ওখান থেকে জানতে পারলাম।একটির নাম সিরিবাকা আর অন্যটা কোল্লুরু। আমাদের থাকার জন্য কোল্লুরু ক্যাম্পে ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। তারপর শেয়ার এর গাড়িতে আবার একঘণ্টার যাত্রা শুরু হল। তবে এই যাত্রাপথ যথেষ্ট চিত্তাকর্ষক ছিল। রাতের অন্ধকারে যা যা দেখতে পাইনি সেগুলো একে একে দৃশ্যমান হল। রাস্তার দুধারে ছোট ছোট পাহাড়। যতটা রাস্তা সমতলের ওপর দিয়ে গেছে সেখানকার প্রাথমিক জঙ্গল কেটে ধান জমি এবং চারা গাছ লাগানো হয়েছে। কিছুদুর যাওয়ার পর যখন রাস্তা সবে সমতল ছেড়েছে তখন দূরে দেখতে পেলাম গোদাবরী কে। শান্ত নীরব ভাবে বয়ে চলেছে পুর্বঘাট পর্বতমালার ছোট ছোট পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে। কিছুটা পর্বত ও জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর উপস্থিত হলাম নদীতীরে। আমরা শেয়ারের গাড়ি থেকে নেমে লঞ্চে ওঠার জন্য এগিয়ে গেলাম। ট্যুরিজম সংস্থার কর্মীরা ভাঙ্গা হিন্দি ও ইংরাজিতে প্রাতরাশ সেরে আমাদের লঞ্চে উঠতে বললেন। প্রাতরাশ বলতে উপমা এবং চা। এখানে বলে রাখি দক্ষিণী খাওয়ার খেতে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা খুবই আনন্দদায়ক হবে। আমরা উপমা খেয়ে লঞ্চে উঠে পড়লাম। তারপর শুরু হল গোদাবরীর বুকে ভেসে পড়া। লঞ্চ এগোতে থাকল ধীরে ধীরে। মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকলাম পুর্বঘাট পর্বতের ছোট ছোট সবুজ গাছে ঢাকা অনুচ্চ পাহাড়গুলি। তাদের ছুয়ে বয়ে চলেছে গোদাবরী। তাকে দেখে বোঝাই যায় না সে এই পাহাড়্গুলির বুক চিরে বালি পলি দিয়ে নদী উপত্যকা তৈরি করেছে। এভাবে অনেকখানি সময় কাটল পাহাড়ের সারি দেখতে দেখতে। দৃশ্যটাকে ক্যামেরা বন্দির চেষ্টাও করেছিলাম একটু আধটু। কিন্তু দুচোখ ভরে দেখেছিলাম সবুজ পাহাড়ের গায়ে তালপাতার কুঁড়েঘর, কোথাও আবার বাঁশের তৈরি বাড়ি। আবার কোথাও কোথাও যেখানে নদীতে বালির চর পড়েছে সেখানে জেলেদের তালপাতার অস্থায়ী আস্তানা। এখানে নদী অনেকটাই চওড়া এবং নদীরতীরের অধিবাসীদের খালি চোখে পিপিলীকার ন্যায় খুদ্রাকৃতি দেখাচ্ছিল। ক্যামেরার মধ্যে দিয়ে দেখলাম তাঁরা কেউ ছোট ডিঙ্গি করে মাছ ধরছেন কেউ বা আবার কলসীতে জল ভরে নিয়ে যাচ্ছেন কেউ স্নান করছেন বা কাপড় ধুচ্ছেন। দূরে পাহাড়ের শ্রেনী জলছবির মত আবছা হতে হতে আকাশে মিলেছে।
মেঘেদের বাড়ি
কিছুক্ষনের মধ্যেই সব আলো নিভে গিয়ে সুয্যিমামা মেঘের আড়ালে মুখ লুকোলেন।আর ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। সাথে লঞ্চে তেলুগু ভাষায় গান চলছিল যা ভাষা না বোঝার কারণে উপভোগ করতে পারছিলাম না। যাই হোক এত ভালোলাগার মধ্যেও ওটুকু না পাওয়াকে উপেক্ষা করাই যায়। দেখতে দেখতে বর্ষার অপরূপ সৌন্দর্য্য আমাদের চোখে ধরা দিল। সবুজ পাহাড়ের গা বেয়ে মেঘগুলো ধোয়ার মত ওপরে উঠতে থাকে। এমন সময় নদীর ধারে একটি ঘাটে লঞ্চ থামে। আবার তাঁরা ইশারা এবং হিন্দি ইংরেজির মিশেলে বুঝিয়ে দিলেন যে লঞ্চ ওখানে মিনিট পনেরো দাঁড়াবে। তার মধ্যেই ওখানে যে পুরনো মন্দির আছে তা দর্শন করে ফিরে আসতে হবে। লঞ্চ থেকে নামার পর সিড়ি দিয়ে একটু ওপরে উঠে দেখলাম একটা ছোট্ট গ্রাম। অধিবাসীরা বাঁশ দিয়ে হাতে তৈরি পাখা আর ফোটোফ্রেম বিক্রি করছেন। এরপর একটা পুরনো শিব মন্দির দেখলাম। একটি ক্ষীণ জলধারা মন্দিরের পিছনের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে মন্দিরের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে। লঞ্চে জুতো ছেড়ে আসায় সবাই ওই জলধারায় পা ধুয়ে মন্দিরে প্রবেশ করছিলেন। মন্দির দেখে আশপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আবার লঞ্চে ফিরছিলাম। ওই ছোট্ট গ্রামটিতে বিশাল বপু আম জাম অশ্বথরা তাদের প্রাচীনত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছিল। ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়ের দল আম জাম কুড়িয়ে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে সামান্য উপার্জন করছিল। বৃষ্টির জন্য ক্যামেরা নিয়ে না নামায় খালি চোখে দেখেই উপভোগ করে ফিরলাম। আবার যাত্রা শুরু হল কোল্লুরুর উদ্দেশ্যে যেখানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। লঞ্চে কয়েকজন স্থানীয় শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করছিলেন। গানের ভাষা বুঝতে না পারলেও গানের তালে তাদের নাচ ভালোই লাগছিল।
কিছুক্ষণ পর আমরা কোল্লুরু পৌঁছলাম। লঞ্চ থেকে নামলাম খাওয়ার জন্য। কিন্তু ততক্ষনে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমে গেছে। এবং তাল পাতার ছাউনি ভেদ করে জল আমাদের খাবারে পড়ছিল। যদিও সুস্বাদু খাদ্যের মধ্যে ভাত, ডাল, সবজি, টকদই, চাটনি, সুজি ছিল কিন্তু তার কোনটাই বৃষ্টির জল ছাড়া উপভোগ করা যায়নি। এখানে উল্লেখযোগ্য বাঁশে পোড়া মুরগির মাংস। সেটা স্থানীয় জেলেরা বিক্রি করছে বলে ওটা আলাদা করে কিনতে হয়েছিল। তবে কোলকাতার দামি রেস্তোরাঁয় যেটা পাঁচশ টাকা সেটা এখানে একশ টাকা। স্বাদ্গ্রহনের পর ক্ষনিকের জন্য হারিয়ে গেছিলাম। মাংসগুলি ছোটোছোটো টুকরো করে মশলা মাখানো তারপর কচি বাঁশের মধ্যে পাতায় মুড়ে ঢুকিয়ে কাঠকয়লায় ঝলসানো। কোলকাতার রেস্তোরাঁয় দাম দিয়ে যে স্বাদ পাইনি সেই স্বাদের অপুর্ব ছোঁয়া এখানে পেলাম। খাওয়ার শেষে প্রায় কাক ভেজা হয়ে আমরা লঞ্চে ফিরলাম। এসে গা মাথা মুছে বসলাম লঞ্চে। আবার নাচ গান সহযোগে যাত্রা শুরু হল।আরো কিছুক্ষন ঘোরার পর বৃষ্টি কিছুটা কমে আসে আর প্রকৃতির অপরূপ রূপ ধরা দেয় দৃশ্যপটে। আমাদের কিছুক্ষনের মধ্যেই কোল্লুরু ঘাটে নামিয়ে দেয় এবং আমরা ক্যাম্পের দিকে এগোই।
ক্যাম্প
খানিকটা সমতল বালির চর থাকার পর মাটির একটু উঁচু উপত্যকা । প্রবল বৃষ্টিতে তার প্রায় সবটাই পিছল এবং কর্দমাক্ত। ফলে ভারি ব্যাগ নিয়ে উঠতে গিয়ে আছাড় খেলাম খাড়া মাটির ঢালে। আমাকে সামলাতে গিয়ে আরও দুজনের পদস্খলন হল। তাদের একজনের কোলে একটি শিশুও ছিল। আমি বাচ্চাটিকে তুলতে যাওয়ায় সে প্রবল বিরক্ত হয়ে তার বাবা মায়ের কাছে চলে যায়। কোনরকমে উঠে সামনে বসে থাকা একজনকে দেখলাম যাকে আমাদের কোল্লুরু ক্যাম্পে থাকার টিকিট দেখাতে হল। বোঝা গেল ইনিই আমাদের কোল্লুরু ক্যাম্পে থাকার টিকিট পরিদর্শক। তিনি আবার আমাদের নিরাশ করে বললেন “ নো হিন্দি...ইংলিশ লিটল লিটল...বাট নো হিন্দি।“ মনুষ্য জগতের প্রধান ভাব প্রকাশের মাধ্যমের সংকটের সময় আমাদের সহযাত্রী একটি হায়দ্রাবাদী পরিবার আমাদের সাহায্য করলেন এবং আমাদের বক্তব্য তেলুগু তে অনুবাদ করে দিলেন। আমাদের তাঁবুর নম্বর ছিল আটত্রিশ এবং উনচল্লিশ। যার মাথায় আগে থেকেই তাঁবু দুটির বাসিন্দা দুটি গিরগিটি বসে ছিল। তাঁবু থেকে একটু দূরে সারিবদ্ধ আটটি শৌচাগার। তাঁবুতে ব্যাগ রেখে, স্নান সেরে, পোশাক বদলে দুপুরের কাকভেজা অবস্থা থেকে রেহাই পেলাম। কিন্তু আছাড় খাওয়ার সময় পায়ে যে চোট লেগেছিল সেটা কতটা জোরালো ছিল সেটা টের পেলাম তখন। পা থেকে রক্ত বেরচ্ছে সেটা এতক্ষনে নজরে এল। পা ধুয়ে তাঁবুতে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা করলাম। কিন্তু ক্যাম্পিং এর অভিজ্ঞতা না থাকায় এবং আগে থেকে প্রস্তুতি না নেওায় আমাদের বেশ অসুবিধাই হয়েছিল ক্যাম্পে। কিছু পরে ওই হায়দ্রাবাদী পরিবারের এক সদস্যের
আহবানে আমরা নদী তিরে উপস্থিত হলাম। ওঁরা সেখানে ফুটবল খেলছিলেন। আমার পায়ের ওই অবস্থায় ইচ্ছে থাকলেও খেলতে পারলাম না। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে থাকলাম। একটু আগেই যেখানে লঞ্চের ভিড় ছিল সেখানে এখন আর একটিও লঞ্চ নেই।কয়েকজন জেলে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। গোদাবরী নিঃশব্দে বয়ে চলেছে। কয়েকটি গ্রামের ছেলে নদীর পাড়ে একটি ছোট্ট ডিঙ্গি নিয়ে খেলছিল। কখনও বালি নিয়ে কখনও ছোট ছোট মাছ নিয়ে (যেগুলি জেলেরা জাল থেকে ছাড়িয়ে ফেলে দিচ্ছিলেন সেই মাছ) ছোড়াছুড়ি করে খেলছিল। একটা জ্যান্ত মাছের পাখনা একটা প্লাস্টিকের ঢাকনায় আটকে ছুড়ে জলে ফেলে দিচ্ছিল আবার টেনে আনছিল। এইসব দেখতে দেখতে হারিয়ে গিয়েছিলাম ফেলে আসা মেয়েবেলায়। যখন আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে হাঁস মুরগির বাচ্চা খুঁজে বেড়াতাম আর তাদেরকে খুব আদর করতাম। সামনের দৃশ্য অতি মনোরম হওয়ায় আবার অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে এসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে শুরু করলাম। মেঘগুলো ধোঁয়ার মত ধীরে ধীরে পাহাড়ের গা বেয়ে উপরে উঠে গিয়ে পাহাড়ের মাথায় চাঁদোয়ার সৃষ্টি করল। কোনদিকে যে সুর্য্য অস্ত যাচ্ছে তা ঠাহর করতে পারলাম না। শুধু ঘরে ফেরা পাখির ডাক আমাদের মনে করিয়ে দিল গোধূলি পার হয়েছে। হঠাৎ চোখে পড়ল একটা ছোট্ট ডিঙ্গি
গোদাবরীর তীরে একটি গ্রাম
আদিবাসী জেলে
পাহাড় চেরা ছোট্ট নদী
পায়ের ব্যাথাটা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অগত্যা তাবুতে ফিরে আসতে হল। ওই পরিবারের এক সদস্যা খবর দিলেন জলখাবার দিয়েছে। আমরা যে মাইকের কোন প্রচারই বুঝতে পারছিনা সেটা বুঝেই বোধহয় আমাদের সাহায্য করেছিলেন। আমাদের তাঁবুটা যে উপত্যকায় তার দুই ধারে সারিবদ্ধ তাঁবুর মাঝখানে একটি ছাউনি ঘেরা জায়গা, যেখানে তিনটি পাত্রে চা কফি এবং মোষের দুধ রাখা ছিল। সাথে আলু ও কারি পাতার একটি চপ। খেয়ে তাঁবুতে ফিরে এসে অলসভাবে কেটে গেল সময়। এতক্ষনে পুরোপুরি অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। কিন্তু ঘন মেঘ থাকায় তারা বা চাঁদ কিছুই দেখতে পেলাম না। অগত্যা কয়েকটা এলোমেলো আলোচনায় কাটল সময়। কিছুক্ষনের মধ্যেই সৌর বিদ্যুতের একটি বাতি জ্বলে উঠল প্রতিটি তাঁবুতে। আমি আমাদের তাঁবুর আলো নিভিয়ে কিছুক্ষন শুয়ে রইলাম। আর কান পেতে পাশের জঙ্গল থেকে আসা কোন পশুর ডাকের অপেক্ষা করছিলাম। নিরাশ হয়ে একটূ আচ্ছন্নই হয়ে পড়েছিলাম। ঠিক তখন বাবা মা আমাকে ডাকল নৈশভোজের জন্য। আয়োজনের কোন ত্রূটি ছিলনা। ভাত, মটর ডাল, আলুভাজা, আরও একটি সবজি ভাজা, বেগুনের তরকারি, মাছ, মুরগির মাংস সব দিয়ে জমিয়ে ভোজন সেরে শুতে এলাম। জুন মাস হওয়ায় একটু ভ্যাপসা গরম লাগছিল তাঁবুতে। তাঁবুর দরজা সামান্যও ফাকা করে দিতেই ফুরফুরে হাওয়া আসতে শুরু করল। সারাদিনের ক্লান্তি এবং বৃষ্টি ভেজার জন্য ঘুম আসতে দেরি হলনা। কিছু পরেই ঘুমের মধ্যে টের পেলাম অঝোরে বৃষ্টি নামল। তাঁবুর দরজা ভালো করে বন্ধ করে বেঁধে দিলাম। এরপর ঘুম ভাঙ্গল ভোরবেলা। আলো তখন সবে ফুটছে। ট্যুরিজম ডিপার্ট্মেন্টের লোকটির পোষা কুকুর আর আট দশটি নেড়ি মিলে বেশ আসর জমিয়ে গলার জোর পরীক্ষা করছিল। আমরা তাঁবু থেকে বেড়িয়ে গুটি গুটি পায়ে নদীর দিকে এগোলাম। আমাদের দেখে তাদের আসর ভঙ্গ করে আমাদের অনুসরণ করে ডাকতে শুরু করল। আমরা মাটির ঢালু জায়গার ওপরে এসে সামনের দৃশ্য দেখে থমকে রইলাম। যেন নিল রঙের রঙ তুলিতে দিয়ে আঁকা নৈসর্গিক এক দৃশ্য। নিল পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে একটি নিল জলরাশি। যেন ঘুমন্ত পাহাড় গুলিকে ভোরের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে গোদাবরী নিজে। রাতে প্রবল বৃষ্টির পর চারদিক একদম চুপচাপ। শুধু শব্দ বলতে সারমেয়গুলির স্লোগান। কিছু মুহুর্ত স্তব্ধ হয়ে ভোরের সৌন্দর্য্য আস্বাদনের পর নদীপাড়ে উপস্থিত হলাম। যেখানে দূর থেকে আসা কুকুর গুলির ডাক ছাড়া ঝিঁঝিঁর আলত ডাক শোনা যাচ্ছে। কিন্তু গোদাবরীর মিষ্টি জল এত শান্ত হয়ে বয়ে চলেছে যে তার চলার কোন সাড়াই পাওয়া যাচ্ছেনা। যেন সাগরের সঙ্গে মিলনের যাত্রাটা সে খুব চুপিসারেই সেরে ফেলতে চায়। আমরা তার গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ না করে শুধু সৌন্দর্য্য উপভোগ করে তাঁবুতে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
জঙ্গল পাহাড় নদীর পথ
জঙ্গলে লাল মাটির পথ
তারপর ঘুম ভাঙ্গল সকাল সাতটা নাগাদ। দাঁত মেজে প্রাতরাশ সারতে গেলাম। খাদ্য তালিকায় ইডলি, বড়া, সাম্বার, চাটনি, উপমা, দই, চা, কফি সবই ছিল। প্রাতরাশ সেরে চললাম ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। এবারও অনুসরন করলাম ওই হায়দ্রাবাদী পরিবারকে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে লাল মাটির পথ চলেছে। ছোটো বড় গাছ এবং লতাপাতায় ভর্তি রাস্তার দুদিক। স্থানে স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাবে বড় বড় পাথর পরে রয়েছে। এরই মধ্যে দিয়ে প্রায় দেড় থেকে দু কিলোমিটারের মধ্যে দেখলাম ওই স্থানটি। ঝর্ণা ঠিক বলা যায়না। বড় বড় কঠিন শিলা জলের গতিকে খানিকটা অবরুদ্ধ করেছে। তবে এটি গোদাবরীর প্রধান সোঁতা নয়। একটি উপনদী মাত্র, যা আমাদের ক্যাম্পের প্রায় সমান্তরালে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরীতে মিলিত হয়েছে। এখানে পাথরের খাড়াই ঢাল বেয়ে সবাই নিচে নেমে স্নান করছে যদিও কিন্তু আমার পা আবার আমাকে আটকে রেখে শুধু ক্যামেরায় দৃশ্য বন্দী করেই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য করল। আমরা যে রাস্তাটা দিয়ে এসেছিলাম সেটি এই উপনদীটির সমান্তরালে আরো কিছুদুর এগিয়ে গিয়েছে। সম্ভবত এটি স্থানীয় অধিবাসীদের যাতায়াতের পথ। এই স্থানটি রাস্তা থেকে বেশ নিচুতে। এখান থেকে চারদিকে যতদুর দেখা যায় খালি বিভিন্ন উচ্চতার পাহড়ের মাথাই চোখে পড়ে। যেন পাহাড়ের চক্রব্যুহের মধ্যে দিয়ে উপনদীটা বয়ে গেছে। আবার জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে তাঁবুতে ফিরে এলাম। এবার আমাদের ফিরতে হবে। ফিরতে হবে বাড়ির উদ্দেশ্যে। শত মন খারাপ নিয়ে ব্যাগ গোছানো যখন প্রায় শেষের দিকে তখন শুনলাম কাছ থেকেই অনেকগুলো শিয়াল একসঙ্গে ডাকছে। এই প্রথমবার সারমেয় ব্যাতিত অন্যও কোন পশুর ডাক শুনলাম। তাঁবু ছেড়ে ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে এবার বেরিয়ে পড়া। এতক্ষন যা যা খেয়াল করিনি তা একে একে সবই কোল্লুরু হাট ছাড়ার আগে চোখে পড়ল। একটি বিদ্যালয়, কতগুলি তালপাতার ছাউনি দেওয়া কুঁড়েঘর, একপাল মোষ এবং কিছু মোরগ ও মুরগি। যার কয়েকটাকে রোজই পর্যটকদের খাদ্য হিসেবে পরিবেসন করা হয়। মধ্যাহ্নভোজনের তালিকাও চমকপ্রদ ছিল। আগের রাতের মতোই ভাত, ডাল, ভাজা, সবজি, মাছ, মাংস সবই। ভোজন সেরে নদীতীরে উপস্থিত হলাম। প্রায় দেড়টা বাজতে চলেছে। একে একে লঞ্চের ভিড় জমতে শুরু করেছে। ওই হায়দ্রাবাদী পরিবারটিকে বিদায় জানিয়ে রাজমুন্দ্রির লঞ্চে উঠলাম। লঞ্চের ডেক থেকে শেষ বারের মত হাত নেড়ে বিদায় জানালাম ওই পরিবারকে এবং কোল্লুরুকে। ফেরার পথে আবার পূর্বঘাট পর্বতমালা এবং গোদাবরীর অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম রাজমুন্দ্রির ঘাটে। পথে আবার মুষলধারে বৃষ্টি নেমেছিল। আমরা লঞ্চ থেকে ঘাটে নামতেই তাঁরা আমাদের ভাঙ্গা হিন্দিতে জানিয়েছিলেন এটাই আমাদের গন্তব্যস্থল যেখান থেকে ট্যুরিজম ডিপার্ট্মেন্টের বাস আমাদের পৌঁছে দেবে রাজমুন্দ্রি স্টেশনের কাছে। আমরা জিনিষপত্র নিয়ে বাসে উঠলাম।বাসটি ছাড়ার পর প্রায় একশ গজ দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। বেশ কিছুক্ষন বাদে পর পর দুটি ব্লাস্টের আওয়াজের পর দেখলাম যে বাঁধ তৈরি হচ্ছে গোদাবরীর ওপরে। তাই পাহাড় কাটার কাজ চলছে। এখানে গোদাবরী প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার চওড়া। অতীব সুন্দর রাস্তা যা দিয়ে একবার গেলে সারা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বোধহয় লাফাতে লাফাতে একজায়গায় জমা হয়ে যায়, এরকম অবস্থায় প্রায় ঘন্টা তিনেক যাত্রা করে পৌছালাম রাজমুন্দ্রি। সেখানে স্টেশন সংলগ্ন একটি রেস্ট্রুমে নৈশভোজ করে রাত্রে বিশ্রাম করে পরেরদিন সকাল ছটায় সাত্রাগাছিগামী একটি স্পেসাল ট্রেনে উঠে ছোট্ট চিকিৎসা এবং ভ্রমণের উভয় উদ্দেশ্যই সফল্ভাবে শেষ হয়।
সবশেষে বলতে পারি ভাষা বিনিময়ের একটু অসুবিধে থাকলেও পূর্বঘাটের পাহাড় ঘেরা গোদাবরীর মিষ্টি জলধারার নৈসর্গিক দৃশ্য অতুলনীয় এবং ভ্রমণ পিপাসু বাঙ্গালিদের উপযুক্ত রসাস্বাদনের ক্ষেত্র। ওখানে শীতকালে বালির চরে রাতে ক্যাম্প ফায়ার এবং আদিবাসীদের নৃত্য দেখার সৌভাগ্য হতে পারে।
একটি নিদারুন খারাপ লাগা মিশে আছে এত ভালোলাগার মধ্যেও। প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট, খাবার থালা যথেচ্ছভাবে গোদাবরীর বুকে ফেলে আসছেন লঞ্চের কর্মীরা এবং পর্যটকরা। যে কোল্লুরু ক্যাম্পে আমরা ছিলাম সেখানে নদীর পাড়ের বালিতে যথেচ্ছভাবে ছড়ানো রয়েছে প্লাস্টিক দ্রব্যাদি এবং কাচের বোতল। প্রতিটি তাঁবুর নিচেই পরে আছে এই ধরনেরই আরও আবর্জনা। আমরা কি সত্যিই পারিনা দূষণ মুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এবং অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিতে?
*ছাত্রী, ২০১৫
Keep it up. You described the place so well like I felt as I can see everything in front of my eyes. Keep going. Keep writing more travel blogs. Eager to read more from you.
উত্তরমুছুনThank you very much friend.. I will try my best..
মুছুনঅসম্ভব সুন্দর ভাবে বিবরণ দিয়েছেন। আপনার পরের অভিযানের অপেক্ষায় রইলাম।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ এতোটা উৎসাহ দেওয়ার জন্য। নিশ্চয়ই লিখব।
মুছুন