পোস্টগুলি

হিমালয়ের কঠিন ট্রেক; জংরি-গোচা লা

ছবি
পল্লবী সেন রোমাঞ্চের খোঁজে পাহাড়ি পথে হেঁটে চলার নামই ট্রেকিং. আর যে কোন ট্রেকারদের কাছেই স্বপ্নের গন্তব্য হলো জংরি গোচা লা ট্রেক, যা ভারতের অন্যতম কঠিন ট্রেকগুলির একটি। পাহাড়ের প্রতি অমোঘ টান আর ভালোবাসার থেকেই ব্যস্ততম শহর কলকাতা থেকে বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপূজা ছেড়ে আমরা ৭ বন্ধু রওনা দিয়েছিলাম পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা বেস ক্যাম্প - এই গোচা লা পৌঁছাবো বলে।  কিন্তু রওনা দেওয়ার পথে বাধ সাধলো বৃষ্টি। প্রায় মাস চারেক আগে থেকে সমস্ত প্ল্যানিং শুরু হয়ে গিয়েছিল আমাদের কিন্তু রওনা দেওয়ার দিন যতই এগিয়ে আসতে থাকলো গুগলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে আমাদের চিন্তা বাড়তেই থাকলো। এবছর বৃষ্টির মরসুম বেশ কিছুদিন পিছিয়ে যাওয়ার কারণে সেপ্টেম্বরে বর্ষা বিদায় না নিয়ে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টি চলল। যার ফলে আমাদের এই ট্রেকে যাওয়ার অনিশ্চয়তা দেখা দিল। মনের মধ্যে অনেক দ্বিধা নিয়ে আমরা ট্রেকিং এর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের কেনাকাটা করতে থাকলাম। অবশেষে বৃষ্টির মোকাবিলা করতে হবেই জেনে সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বন করে মনে উত্তেজনা আর অনেকটা জোর নিয়ে রওনা দিলাম আমরা সাতজন। শিয...

সবুজ মেখলিগঞ্জ ও আন্তর্জাতিক সীমানা

ছবি
মৌসুমী ব্যানার্জী  রাত ১০.০৫ এ ট্রেন সময় মতোই ছাড়ল। দার্জিলিং মেল। ট্রেনে উঠে জিনিসপত্র গোছগাছ করে নিজের বিছানা পেতে শুয়ে পড়লাম। ছোটবেলা থেকেই রাতের ট্রেনে এই কাজটি আমার বেশ লাগে। আমাদের গন্তব্য শেষ স্টেশন, হলদিবাড়ী।  পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙল। ট্রেন তখন কিষেণগঞ্জ ছাড়ছে। জুলাই মাসের শেষের দিক। জানলার বাইরে সবুজ আর সবুজ। দিগন্তে মেঘলা আকাশে এই সবুজ মিশে গিয়েছে।  আকাশে মেঘের স্তর– নানা রঙের বাহার এক এক স্তরে। এরই মধ্যে নতুন দিনের শুরুর আভাস। নরম কমলা রঙ প্রকৃতির অঙ্গ জুড়ে। ক্ষেতের জমা জলে ছড়িয়ে পড়েছে নরম কমলা রঙ। মেঘের ফাঁক দিয়ে সূয্যিমামা দেখা দিলেন। কি অপরূপ রূপে তখন প্রকৃতি!  জানলার কাঁচের ভিতর থেকেই ছবি নেওয়ার চেষ্টা করলাম।                           আমার গন্তব্য মেখলিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম। আরও অনেকের মতোই  এই শাখার অধ্যক্ষ মহারাজের কাছ থেকে ডাক পেয়েছিলাম সেই অতিমারীর শেষের সময়কালে। সবুজ খোলামেলা প্রকৃতি, তিস্তা নদী, আকাশ পরিষ্কার থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখাও পাওয়া যায়  – জেনে ...

কাল্পনিক

ছবি
কস্তুরী দাশ  সরু আঁকাবাঁকা একটা নীল নদীর ধারে, সবুজ ঢালু ঘাসজমিতে একটা লাল বাড়ি। দুটো মোরগ, ছ'টা  মুরগি আর আটটা হাঁস নিয়ে লিং আর লিং এর বাবা মা থাকে সেখানে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই, লিং এর জানলার ধারে হলুদ সিডার গাছে রোজ একটা লাল ম্যাকাও এসে ডাকে। আজও এসেছে। ঘুম ভাঙতেই লিং ছুটলো বারান্দায়, সেখানে হেলানো চাল থেকে টুপিটুপিয়ে শিশির পড়ছে মাটিতে ঘাসের ওপর। ভোর ভোর শিশির স্নান করে ঝিকমিকিয়ে উঠছে ঘাসেরা। হেলে দুলে এ ওর গায়ে জল মাখিয়ে দিচ্ছে আনন্দে।  গরম গরম একবাটি সোনালী স্যুপ খেয়েই লিং ছুটলো নীল নদীটার ধারে।  খাতা খুলে আঁকতে শুরু করলো নদীর ধারে বসে। আজ সারাদিন শুধু রঙ-তুলি-আঁকা।  দুপুর গড়িয়েছে অনেকক্ষণ। লিং এঁকে চলেছে। প্রথমে নদী, তারপর বাড়ি, তারপর ঘন জঙ্গল। সেখানে সূর্য ডোবে ডোবে। রঙ তুলিতে আকাশের রঙ নদীর বুকে লাল হয়ে উঠতেই, লিং এর মা জোরে জোরে ডাকলো। শুনতে পেলনা লিং। তখনো আঁকার খাতায়, নদীর পাড়ে মাটির বিবর্ণ ঘাসগুলো রঙ করা হয়নি।  পাখিরা বাসায় ফিরছে। আকাশের রঙ ধূসর হচ্ছে ক্রমশঃ। তিনটে পাখি আঁকলো লিং। আলো কমে আসায় তিনটে পাখির রঙই কালো দেখাচ্ছে।  মা পাখিটা গ...

অতীত

ছবি
  টিনা মণ্ডল শীতল রাতের আকাশ বেয়ে নেমে আসে একরাশ গভীর অন্ধকার,সে অন্ধকার যেনো শূন্যতা বোঝায়, সে গভীর অন্ধকার উপেক্ষা করে আকাশ এর দিকে তাকিয়ে দেখা যায় উজ্জ্বল তারায় অপরূপ সাজে সজ্জিত নীল আকাশ , সত্যিই প্রকৃতি কি অপূর্ব সুন্দর তাই না! এতক্ষণ প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য অনুভব করছিল নিরুপমা। বেশ অনেক্ষণ সে ছাদে,,রাত কতটা হয়েছে খেয়াল ছিলনা তার , কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে নিজের ছন্দে, শহরের বুকে বাড়ি হওয়ায় রাতের বেশ অনেকখানি সময় শহরের কোলাহল শোনা যায় । নিরুপমা মনে মনে বুঝতে পারলো নিজের বেখেয়ালে সে অনেকটা সময় বসে আছে ফাঁকা ছাদে, ঠাণ্ডার প্রকোপও বেশ বেড়েছে তখন ,,  নিরুপমা নেমে আসে, ঘরে এসে দেখে ঘড়ির কাঁটার তখন ১টা বেজে ৩০ মিনিট ছুঁতে আর কিছু মুহূর্ত বাকি, মৃদু হাসলো সে! আনমনা হয়ে থাকাটা যেনো খুব বেশি সময় নিয়ে নেয় আজকাল তার । নিরুপমা বেশ সাহসী মেয়ে আর পাঁচটা মেয়ের মতো সে জীবনের ওঠাপড়ায় ভেঙে পড়েনি কখনও ,  তবে কিসের ভয়ে সে বন্ধুদের সাথে কখনও খোশগল্প করেনা, কখনও বাইরে বেরয়না ,কিসের ভয়ে সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে ?! ছোটখাটো চেহারার এতো সুন্দর মলিন মুখটা কেনো সবস...

এল ডোরাডো থেকে আমাজনের আগুন : একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ছবি
    ফাল্গুনী দে   তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই   নকুড় বাবুকে মনে পড়ে ? প্রফেসর শঙ্কু ? সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত রহস্য গল্পে মানুষের মন পড়ে নেবার এবং ভবিষ্যৎ বলে দেবার নকুড় বাবুর সেই অলৌকিক দক্ষতা ? যাঁকে নিয়ে প্রফেসর শঙ্কু পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর আমাজনের গভীর জঙ্গলে এল ডোরাডোর রহস্য অনুসন্ধানে ? অথবা স্যার ওয়াল্টার   ​ র ‍ ্যালেই - এর কথা ? রানী প্রথম এলিজাবেথ কে কথা দিয়ে যিনি রহস্য নগরী এল ডোরাডোর পথে পাড়ি দিয়েছিলেন সোনার খোঁজে ? ইতিহাসের এমন আশ্চর্য অনেক ঘটনা জানা অজানার বাইরে থেকে যায় যা আমাদের কৌতুহলী মনকে বিস্ময়ে আবিষ্ট করে তোলে।    মানুষ মাত্রই ভ্রমণের উদগ্র আকাঙ্ক্ষা লালন করেন মনে মনে। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ার এই নেশাই তাকে করে তোলে বোহেমিয়ান। পথে পথে আপাত উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়িয়ে মানুষ অচেনাকে চিনেছে , অজানাকে জেনেছে। আবিষ্কার করেছে খুঁজে বের করেছে নানান রহস্যের নিত্য নতুন দিগন্ত। এই সুযোগে লেখক , কথক...